তারাবির সালাতের কোয়ানটিটি নয়, কোয়ালিটি-ই মূখ্য বিষয়: আসলাম হোসাইন

তারাবির সালাতের কোয়ানটিটি নয়, কোয়ালিটি-ই মূখ্য বিষয়

তারাবির সালাত ৮ বা ২০ রাকআত যে যেটাই আমল করুন না কেন হাদিসের আলোকে দু'টোই সহিহ। সুতরাং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে সালাতের মধ্যে ঐকান্তিকতা বৃদ্ধির দিকটিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। অর্থাৎ তারাবির সালাতের কোয়ানটিটি নয়, কোয়ালিটি-ই মূখ্য বিষয় হওয়া উচিত। অথচ আমাদের দেশে এ বিষয়টির দিকে গুরুত্ব কম দিয়ে তারাবির সালাতের রাকআত সংখ্যা নিয়ে বেশ বাড়াবাড়ি লক্ষ্যণীয়। যা সুন্নত সমর্থিত নয়।

তাই এ দিকটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া পরামর্শ  দিয়ে ফেসবুকের এক পোস্টে এ সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামী গবেষক লেখক ও আলিম শায়খ আসলাম হোসাইন সবাইকে আহবান জানিয়েছেন। তার সেই লেখাটি আমরা 'দৈনিক লেখক' পাঠকদের উদ্দেশ্য এখানে হুবহু তুলে ধরছি, ইনশাআল্লাহ। 


শায়খ আসলাম হোসাইন লিখেছেন-


তারাবির সালাত ২০ রাকাতকেই টার্গেট করা সালাতের রুকন ও কুরআন তিলাওয়াতের হক আদায় না হ‌ওয়ার অন্যতম কারণ। গ্রামাঞ্চলের কথা বলছি। শহরের অধিকাংশ জায়গায় ২০ রাকাত পড়েও কুরআন তিলাওয়াতের মান অক্ষুন্ন থাকে আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ জায়গার অবস্থা খুবই নাজুক।


ইমাম, মুসল্লি, মুতাওয়াল্লি সবার টার্গেট একটাই; কোনোমতে বিশ রাকাত পড়তে পারলেই বাঁচি । এই টার্গেট নিয়ে যখন নামাজ শুরু করা হয়, তখন না তিলাওয়াতের হক আদায় হয়, আর না সালাতের রুকন গুলো ঠিকমতো আদায় হয়। কিছু কিছু জায়গার সালাতের দৃশ্য দেখলে মনে হয়, এই সালাত ও তিলাওয়াত অভিশাপ হয়ে নামতেছে।‌


ইমাম ও মস‌জিদ কমিটির ব্যক্তিবর্গের উচিত রাকাত সংখ্যাকে একমাত্র টার্গেট না বানিয়ে সালাতের রুকন ও তিলাওয়াতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির দিকে বে‌শি মনোযোগী হ‌ওয়া। এটা একটা মানসিক প্রস্তু‌তির বিষয়। এ‌তে খুব বে‌শি হ‌লে সময় ১৫ থে‌কে ২০ মিনিট বেশি লাগবে। মনকে বুঝিয়ে নিতে পার‌লে এইটুকু বেশি সময়ে কোনো বিরক্তি আসবে না, ইনশাআল্লাহ।


কোনো কোনো ইমাম ও কমিটির অভিযোগ, মুসল্লিরা দ্রুত শেষ করতে চায়। যিনি দ্রুত শেষ চান তার জন্য ইমামের পেছনে বিশ রাকাত নামাজ পড়ার প্রয়োজন নেই। কুরআন খতমের‌ও প্রয়োজন‌ নেই। তার প‌ক্ষে যতটুকু সম্ভব ইমামের পেছনে হক আদায় করে নামাজ পড়ে চলে যাবেন। বাকি নামাজ তিনি চাইলে বাড়িতে গিয়ে একা একা পড়ে নিতে পারেন। কিছু মুসল্লিদের সন্তুষ্ট করার জন্য তো আল-কুর‌আনের অভিশাপ নেওয়া যাবে না।


হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, 'স্রষ্টার নফরমানি করে সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।' মোদ্দাকথা: কোয়ানটিটি নয়, কোয়ালিটি-ই মূখ্য বিষয়।


লেখক- আসলাম হোসাইন,

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম